fbpx
Sale Flat 15% Off & Free Shipping
অফিসে কখন কেমন হবে আপনার পোশাক

অফিসে কখন কেমন হবে আপনার পোশাক

আমরা সবাই জানি, অফিসে যাওয়ার সময় ফর্মাল পোশাক পরা প্রচলিত। কিন্তু বাংলাদেশে সবসময়, বিশেষত সব সিজনে, এই ধারণা বাস্তবে কাজ করে না। বর্ষা, গরম, শীত—প্রতিটি ঋতু এবং পরিবেশ অনুযায়ী পোশাক ভিন্ন হতে পারে। এছাড়া, অফিসের ধরন যেমন কর্পোরেট, স্টার্টআপ, কিংবা আইটি অফিস অনুযায়ী পোশাকের ধরণও পরিবর্তনশীল। এমনকি অফিসের বিশেষ ইভেন্ট, পার্টি, বা গেট-টুগেদারের জন্যও দরকার হয় নির্দিষ্ট স্টাইলের সাজ। এই বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে অনেকেই দ্বিধায় পড়েন—কী ধরনের পোশাক পরা উচিৎ।

যেমন, এক বন্ধু একদিন বলল, “ভাই আইটি অফিসে কাজ করি, সবাই দেখি জিন্স আর পলো শার্ট পরে। আরেক অফিসে দেখি, টাই না পরলে আদবই নেই। আমি বুঝি না, কেমন পোশাক ঠিক হবে!” এরকম পরিস্থিতিতে, বুঝতে হবে আপনার অফিস এবং এর পরিবেশ। একই সাথে, পোশাক এমন হওয়া উচিত যা আপনাকে আরামদায়ক রাখে এবং আপনাকে প্রফেশনাল দেখায়।

তাহলে কীভাবে বুঝবেন কী ধরনের পোশাক কোথায় পরবেন? চলুন, আমরা বিভিন্ন পরিস্থিতি এবং অফিসের জন্য আদর্শ পোশাকের ধারণা নিয়ে কথা বলি।

সিজনের ভিন্নতায় অফিস পোশাকের জাদু

বাংলাদেশের মতো গরম আর আর্দ্র আবহাওয়ার দেশে সিজন ভেদে অফিস পোশাক বাছাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভুল জামাকাপড় শুধুমাত্র অস্বস্তি আনতে পারে তা নয়, এটি আপনার কাজের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। আর তাই, ঋতু অনুযায়ী পোশাক বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আর্টের নিয়মিত ক্রেতা ও বাংলদেশের সেরা এসইও মার্কেটিং কোম্পানি (LutforPRO) -র সিইও এস এম লুতফর রহমান এর মতে, "পোশাক শুধু ব্যক্তির রুচির ব্যাপার নয়; এটি আরাম এবং আধুনিক স্টাইলেরও সমন্বয়। অফিসের দৈনিক কর্মব্যস্ততার মধ্যে সারাক্ষণ হাল্কা রঙের কটন শার্ট আর স্ট্রেচেবল জিন্স পরা যেমন আরামদায়ক, তেমনি প্রফেশনাল লুকও বজায় থাকে। টানা ডেস্ক ওয়ার্কে এটা সবচেয়ে ভালো সমাধান।"

আসুন, সিজন অনুযায়ী আপনার অফিসের ড্রেসকোড কীভাবে সাজাবেন, তা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নিই।

গরমের দিনে: স্বস্তির প্রথম শর্ত

বাংলাদেশের গরমকাল বেশ দীর্ঘ। বাইরে রোদে অতিরিক্ত গরম এবং ভেতরে এসির ঠাণ্ডা পরিবেশের মধ্যে স্বস্তি আনার জন্য পোশাক এমন হওয়া উচিত, যা শীতল এবং আরামদায়ক।  

টিপস:

  • হাল্কা রঙের পোশাক যেমন সাদা, প্যাস্টেল ব্লু বা হাল্কা গ্রে বেছে নিন।  
  • কাপড়ের ক্ষেত্রে *কটন*, লিনেন, বা ব্রেথেবল ফেব্রিক হচ্ছে আদর্শ।  
  • পুরুষদের জন্য প্লেইন কটন শার্ট, পলো টি-শার্ট, এবং স্লিম-ফিট জিন্স সাজেশন হিসেবে দারুণ।  
  • নারীদের জন্য সুতির শাড়ি, সেমি-ক্যাজুয়াল কুর্তি বা লুজ ফিট টপস আর প্যান্ট জুটি বেশ মানানসই।  
  • যদি ক্লায়েন্ট মিটিং থাকে, হালকা রঙের ব্লেজার ব্যবহার করলে প্রফেশনালিজম বজায় থাকে।  

উদাহরণ হিসেবে,ফ্রিলান্সারা বাসায় বসে কাজ করলেও অফিস স্টাইল বজায় রাখতে পছন্দ করেন। তার মতে, “কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে আরামের পাশাপাশি পোশাকেও সুসংঘত থাকতে হয়।” ঠিক তেমনভাবেই, অফিসে আপনি আরাম এবং আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে রাখতে সঠিক পোশাক বেছে নেবেন।  

শীতকালে: আরামের সঙ্গে স্টাইল মিলে যায় যেখানে

বাংলাদেশে শীতের সময় কম হলেও এই ঋতুতে পোশাকের ক্ষেত্রে একধরনের অভিজাতভাব ফুটিয়ে তোলা যায়। ঠাণ্ডা পরিবেশে এবার ফ্যাশন এবং প্রফেশনাল লুকের সমন্বয় করুন।  

টিপস:

  • পুরুষদের জন্য ফরমাল শার্টের সঙ্গে পাতলা কার্ডিগান বা সোয়েটার দারুণ কাজ করে।  
  • ডার্ক কালারের পোশাক যেমন নেভি ব্লু, চারকোল গ্রে, বা ব্ল্যাক লুকটা ভারসাম্যপূর্ণ করে।  
  • নারীদের জন্য কোট-স্টাইল কুর্তি, উলের শাল, কিংবা পাতলা ট্রেঞ্চ কোট সুবিন্যস্ত লুক আনে।  
  • কাজিয়ুয়াল অফিস হলে একটি হালকা জ্যাকেট অথবা স্কার্ফ আপনার কাজে আসতে পারে।  

সম্প্রতি জনপ্রিয় হচ্ছে,স্মার্ট লেয়ারিং যেখানে অফিসে কাজিয়ুয়াল পোশাকের ওপর ছোট সোয়েটার জ্যাকেট বা স্কার্ফ যুক্ত করে শীতের ফ্যাশন বজায় রাখা যায়।  

বর্ষাকালে: স্টাইল ও নিরাপত্তার সমন্বয়

বাংলাদেশের বর্ষাকালে বাইরে বের হওয়া মানেই ঝামেলা। অফিসের জন্য এসময়ে পোশাক এমন হওয়া উচিত যা সহজে ময়লা বা ভিজে যায় না, এবং সারাদিন পরেও আরামদায়ক থাকে।  

টিপস:  

  • পোশাকের জন্য ডার্ক রঙ যেমন ডিপ ব্লু, ব্রাউন, বা চারকোল বেছে নিন। এতে কাদা বা পানির দাগ সহজেই ঢাকা যায়।  
  • হাল্কা সিনথেটিক বা পলিয়েস্টার কাপড় পরিষ্কার রাখার জন্য সুবিধাজনক।  
  •  নারীদের জন্য সিঙ্গেল লেয়ারের কটন ব্লেন্ড কুর্তি ও লেগিংস বর্ষার জন্য পারফেক্ট চয়েস।  
  • ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ ও জুতা এই সিজনে আবশ্যক।  

অফিস পোশাক বাছাইয়ে বর্ষায় ফ্যাশনকে সরিয়ে আরামের দিকে নজর দেওয়া উচিত। এছাড়া, অফিসে অতিরিক্ত পোশাক রাখার অভ্যাস কাজের পরিবেশকে আরও সহজ করে দেয়।  

কেন সিজনাল পোশাক গুরুত্বপূর্ণ?

সঠিক পোশাক শুধু আপনার লুকই বদলায় না, এটি আপনার কর্মস্পৃহা এবং আরাম বজায় রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন, একটি হাল্কা কটন শার্ট গরমে আপনার কর্মক্ষমতা বাড়াবে, যেখানে একটি কার্ডিগান শীতে আপনাকে স্টাইলিশ ও শীত থেকে সুরক্ষিত রাখবে।  

পরবর্তী অংশে, আমরা জানব অফিসের বিশেষ ইভেন্ট যেমন পার্টি, ইফতার বা পিকনিকের মতো অনুষ্ঠানে কী ধরনের পোশাক আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলবে! 😊 


অফিসের বিভিন্ন ইভেন্টে কেমন পোশাক পরবেন

অফিসের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন ইভেন্ট যেমন পার্টি, ইফতার, ডিনার বা পিকনিক কর্মীদের জীবনে বিনোদন এবং একে অপরের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার গুরুত্বপূর্ণ সময়। কিন্তু এই ধরনের অনুষ্ঠানে পোশাক নির্বাচন করা অনেক সময় একটু চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, এই ইভেন্টগুলো ব্যক্তিগত স্টাইল প্রকাশের সুযোগ দেয়, তবে অফিসের মান বজায় রাখাও খুব জরুরি।

“ইভেন্ট অনুযায়ী পোশাক এমন হওয়া উচিত যা চটকদার হলেও অতিরিক্ত নজরকাড়া নয়, যেন তা পরিবেশের সঙ্গে মানানসই এবং আপনি আরামদায়ক অনুভব করেন।” চলুন, বিভিন্ন ধরনের অফিস ইভেন্টে কেমন পোশাক মানানসই, তা নিয়ে কথা বলি।

অফিস পার্টি – স্টাইলের ছাপ রাখুন

অফিস পার্টি মানেই একসঙ্গে রিলাক্স করার সময়। তবে, এখানে পোশাকের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিত্ব তুলে ধরা জরুরি।

টিপস:

  • পুরুষদের জন্য স্মার্ট-ক্যাজুয়াল স্টাইল যথাযথ। একটি ডার্ক রঙের শার্ট, ফর্মাল ট্রাউজার অথবা চাইনোস এবং ব্লেজার পরলে পার্টি লুকে পরিপূর্ণতা আসবে। টাই লাগানো ঐচ্ছিক।
  • নারীদের জন্য একটু ঝলমলে কিন্তু সফট রঙের পোশাক যেমন লং ড্রেস, কুর্তি বা সালোয়ার-কামিজ দারুণ কাজ করবে।
  • অতিরিক্ত অ্যাকসেসরিজ এড়িয়ে চলাই ভালো, তবে একটি সু-স্টেটমেন্ট জুয়েলারি (যেমন অ্যারিং বা ব্রেসলেট) হতে পারে।
  • উদাহরণস্বরূপ, অফিস পার্টিতে আপনি এমন কিছু বেছে নিতে পারেন যা চমৎকার লাগে কিন্তু বেশি কৃত্রিম না লাগে। যেমন, নেভি ব্লু শার্টের সঙ্গে সাদা ট্রাউজার—a নিখুঁত ক্যাজুয়াল ক্লাসি কম্বো!

ইফতার পার্টি: শালীনতা ও স্টাইলের মিশ্রণ

ইফতার পার্টি হচ্ছে অফিসের সামাজিক দিকটি উপভোগ করার অন্যতম সময়। এই বিশেষ ইভেন্টে পোশাক হতে হবে শালীন এবং পরিবেশ উপযোগী।

টিপস:

  • পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি সময়োপযোগী। একরঙা পাঞ্জাবির সঙ্গে সাদা চুড়িদার বা পায়জামা পরে আপনি সুন্দর ফেস্টিভ লুক দিতে পারেন।
  • নারীদের জন্য সালোয়ার-কামিজ বা লং কুর্তির সঙ্গে ওড়না এবং সুন্দর ডিজাইনের স্যান্ডেল ভালো মানাবে।
  • মেটালিক বা সিলভার কাজ করা পোশাক এ ধরনের ইভেন্টে আপনার সাজকে আলাদা মাত্রা দেয়।
  • এস এম লুতফর ভাই একবার বলেছিলেন, “ইফতার পার্টিতে পাঞ্জাবি আমার প্রথম পছন্দ। কারণ এতে শালীনতাও বজায় থাকে, আর আরামও পাওয়া যায়।” তার এই সহজ স্টাইল অনুসরণ করলে আপনি কোনো ভুল করবেন না, নিশ্চিত!

পিকনিক: আরামে ও মজায় দিন কাটানোর স্টাইল

পিকনিক মানেই ফর্মাল পরিবেশ থেকে বের হয়ে একটু নির্মল সময় কাটানো। তাই এখানে পোশাকে একদম ক্যাজুয়াল ফ্লেবারে থাকা উচিত।

টিপস:

  • পুরুষদের জন্য হাফ হাতা শার্ট বা কিছুটা রঙিন পলো শার্ট এবং ডেনিম অথবা চাইনোজ পারফেক্ট। সঙ্গে স্নিকার্স পরলে পুরো “ফান লুক” হয়ে যাবে।
  • নারীদের জন্য ফ্লোরাল প্রিন্টের ড্রেস, পাতলা কটনের কুর্তা, অথবা হাল্কা রঙের লেগিংস দারুণ মানাবে।
  • সানগ্লাস বা ক্যাপ যোগ করলে পিকনিকে পুরো “কুল ও ক্যাজুয়াল লুক” নিশ্চিত হবে।
  • আপনার অফিস পিকনিক যদি ঢাকার বাইরে কোনো গ্রামে বা রিসোর্টে হয়, তাহলে এক জোড়া হালকা ওয়াকিং শু বা লোফার সঙ্গে হাল্কা লেয়ারড ক্যাজুয়াল পোশাক দারুণ মানাবে।

অফিস ডিনার বা কর্পোরেট গেট-টুগেদার: রুচিশীল ও ফর্মাল স্টাইল

ডিনার বা বড় কর্পোরেট গেট-টুগেদারে পোশাক চলে বেশি নীরব এবং রুচিশীল রাখার দিকে। আপনি যেভাবে সাজবেন, সেটিই হবে আপনার পেশাগত অভিজাততার পরিচয়।

টিপস:

  • পুরুষদের জন্য ক্লাসিক স্যুট বেস্ট অপশন। ব্লেজার বা টাই ব্যবহার করুন, তবে জটিলতা এড়ান। কালো বা ডার্ক গ্রে স্যুট এখানে আদর্শ।
  • নারীদের জন্য এলিগ্যান্ট লং ড্রেস, সিল্ক বা সাটিন শাড়ি হতে পারে ভালো চয়েস। ক্লাচ ব্যাগ এবং হাল্কা মেকআপ জুড়ে দিন।
  • স্যুট কিংবা শাড়ি, উভয়ের ক্ষেত্রে মেটাল অ্যাকসেসরিজ পোশাকে একটি নিখুঁত প্রভাব ফেলে।
  • শিখতে পারি এখানে, “ডিনারে আপনি যতটা নিম্ন-মেজাজের পোশাক পরবেন, ততটাই আপনাকে বেশি প্রফেশনাল ও আভিজাত্যপূর্ণ দেখাবে।”

অফিস ইভেন্টে পোশাক বাছাই করতে গেলে পরিবেশ, কাজের ধরন, এবং ইভেন্টের ধরণ বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পোশাক এমন হতে হবে যা আরাম দেয় এবং আপনার ব্যক্তিত্ব তুলে ধরে। অফিসে স্টাইল স্টেটমেন্ট করার সাথে সাথে প্রয়োজন শালীনতাও মনে রাখা।

পরবর্তী অংশে, এমন কিছু সাধারণ টিপস নিয়ে আলোচনা করব যা প্রতিদিনের অফিস পোশাকে আপনাকে আরও স্মার্ট এবং রুচিশীল করে তুলবে। 😊

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Change